মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
রানা প্লাজা ধস ও হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবনের মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। রোববার (৯ এপ্রিল) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী এ আদেশ দেন। আগামী ৮ মে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
এর আগে সোহেল রানাকে দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে সকালে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সুফিয়া খাতুন এ আবেদন করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সোহেলের জামিন বিষয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নুরুউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর ফলে তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা রইল না বলে জানিয়েছিলেন আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুল ইসলাম। তবে চেম্বার আদালত তার জামিন স্থগিত করায় মুক্তি আটকে গেল।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। ঘটনায় ধ্বংসস্তূপ থেকে ২ হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত এবং ১ হাজার ১১৭ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও ১৯ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ১৩৬ জনে। আহত হন ১ হাজার ৫২৪ জন। ২৯১টি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা ছাড়াই ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরে অবশ্য ১৫৭টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ওই ঘটনায় সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে রানার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়। রানা প্লাজা ধস হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন কেবল ভবনের মালিক সোহেল রানা। বাকি আসামিদের মধ্যে জামিনে আছেন ৩২ জন, পলাতক ৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন: রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, রানার বাবা আব্দুল খালেক, রানার মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিন) এ টি এম মাসুদ রেজা, প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসাইন, সাভার পৌরসভার মেয়র মো. রেফাতউল্লাহ, সাভার পৌরসভার সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপসহকারি প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, সাভার পৌরসভার সাবেক টাউন প্ল্যানার ফারজানা ইসলাম, লাইসেন্স পরিদর্শক মো. আব্দুল মোত্তালিব, পৌরসভার সাবেক সচিব মর্জিনা খান, সাবেক সচিব মো. আবুল বাশার, ফ্যান্টম এপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, নিউ ওয়েব বটমস লিমিটেডের এমডি বজলুস সামাদ ও ইথার টেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই মূল মামলাযর বিচার শুরু হয়। এদিন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন।